আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভায় আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে নারী শ্রমিকের সংখ্যা। শ্রম বাজারে মঞ্জুরি প্রদানে বৈষম্য থাকলেও মূলত ঋণের কিস্তি পরিশোধের তাগিদে এক প্রকার বাধ্য হয়েই তারা সন্তান-সংসারের মায়া ত্যাগ করে শ্রম বিক্রি করছে। লালমনিরহাট জেলার তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, স্বর্ণামতি, শিংগীমারী, সানিয়াজান, ত্রিমোহনী, সাকোয়া, মরাসতি নদী, ধোলাই, গিদারী, ছিনাকাটা নদীগুলোর চরাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলোর এ সমস্যা ব্যাপক আকারে দেখা দিয়েছে। এক সময়ের অবস্থা সম্পন্ন এসব পরিবার নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে এসব নদীর কূলবর্তী এলাকাগুলোতে কোনমতে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন। শ্রম বিক্রিই তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। বছরের বিভিন্ন সময়ে এলাকায় কোনো কাজ না থাকায় পরিবার প্রধানরা কাজের সন্ধানে ছুটে যান ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তারপরও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নানা প্রতিকূলতার কারণে বেসরকারি সংস্থাগুলোর ঋণের জালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে পরিবারগুলো। এ কারণে লাজ-লজ্জা ভুলে এক রকম বাধ্য হয়েই নারীরা শ্রম বিক্রি করছেন মাঠে-ঘাটে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার সর্বত্র এখন চলছে ধান কাটার মহোৎসবসহ বিভিন্ন কৃষি ও মাটি কাটার কাজ। আর এসব কাজে নিয়োজিত রয়েছেন নারী শ্রমিকরা। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজের বিনিময়ে তারা মজুরি পান মাত্র ২শত থেকে ২শত ৫০টাকা। সমপরিমান কাজের জন্য পুরুষ শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া হয় ৩শত থেকে ৩শত ৫০টাকা।
নারী শ্রমিকরা জানান, প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তির টাকা দিতে হয়। এ জেলায় সর্বত্র এমন কোন অভাবী পরিবার নেই যারা বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)র ক্ষুদ্রঋণ নেয়নি। কেউ কেউ একাধিক সংস্থার কাছেও ঋণ নিয়েছেন। প্রতি সপ্তাহে ৫শত টাকা থেকে ১হাজার টাকার উর্দ্ধে পর্যন্ত ঋণের কিস্তি জমা দিতে হয় তাদের।